শুক্রবার, ২৫ মে, ২০১২

তাহার তরে “চ ছ জ” বিহীন একটি কবিতা


ইদানীং দেখছি, আমার বন্ধুরা, সাথে কিছু মহান ব্লগার কবিতার (রোম্যান্টিক কবিতা) দ্বারা তাদের কবিত্ব জাহির করছে। আমার "তাহার" মতে, আমি নাকি রোম্যান্টিকতা বিবর্জিত মানুষ, আমার কথায় মিষ্টতার আর রোম্যান্টিক ভাবের অতিরিক্ত অভাব। কিন্তু "তাহারে" কেমনে কই যে তাহার আগে যারাই ছিল তাদের অনেকে আমার কথার মধুতে আক্রান্ত হয়ে Diabetic রোগী বনেছে, এখনো তাদের নিয়মিত বারডেমে যেতে দেখা যায়। যাই হোক, মনঃকষ্টে দিশেহারা হয়ে আমার কিছু রোম্যান্টিক বন্ধুদের শরণ
াপন্ন হলাম, তাদের মতে যারা কবিতা লিখে আর পড়ে তারা নাকি রোম্যান্টিক হয়। অবশেষে গাদাখানেক কবিতা পড়ে একটা ব্যাপারই বুঝতে পারলাম, রোম্যান্টিক কবিতা মানেই “চ ছ জ” শব্দ সম্বলিত হতে হবে। “চ ছ জ” এখানে চুমু, চাঁদ, জোছনা ইত্যাদি সব আজাইরা জিনিসকে বুঝানো হয়েছে। মূলত কবিতাদের নিয়ে আমার ঘাটাঘাটির এটাই মুল কারন। যাই হোক, এবার “চ ছ জ” এর কিছু ডেমো বা প্রমান দেয়া যাক।

গোলাপবালা কবিতায় রবীন্দ্রনাথ বলেছেন
"তবে মুখানি তুলিয়া চাও
সুধীরে মুখানি তুলিয়া চাও !
নীরবে একটি চুম্বন দাও,
গোপনে একটি চুম্বন দাও !"
আমার মতে যেই মেয়ের কাছে রবি বাবুর এই চুমু পাবার তরে আকুলি বিকুলি, মেয়েটি অমায়িক ভদ্র ছিল, কারন মেয়েটি ডিজুস যোগের হলে তখনি বলত,
ঢ়বি বেবস,
Nekhs thaim, যখনি তুমি room date এ আসবা
Phlz, Habib’s থেকে ক্লিন শেভ হয়ে আসবা,
Ur সাদা ঘন জংগলের আড়ালে হারিয়ে যাওয়া ঠোট ২টা আমি পাচ্ছিনা।
Yo may ggo nao,,,,,,,,,,,,,>

চাঁদ, চাদের জোছনা নিয়েও তো কবিতার আর শেষ দেখলাম না। রোম্যান্টিকতার বাইরেও কিছু ক্ষুধার্ত কবি চাঁদ জোছনাকে প্রতীকী রূপে ব্যাবহার করে তাদের খাবারের আশা বেক্ত করেছেন। পেট আর পেটের ক্ষুধা, এই ২টা আবার রোম্যান্টিকতার অনেক উপরে। কারন এই ক্ষেত্রে শুধু কবিরাই না, সাহিত্যিকরাও চাঁদ জোছনাকে ব্যাবহার করেছেন। যেমন, একজন মহান ব্লগার [প্রতিটা ব্লগার একজন উঠতি সাহিত্যিক (আমার কাছে)] লিখেছেন,
“বিকাল গড়িয়ে অস্তমিত সূর্যাস্থ সন্ধ্যা আগমনের বার্তা পৌছিয়ে দিচ্ছে পুরো পৃথিবী জুড়ে। লাল গোলাকার সূর্য্যটাকে এই সময়ে ডিমের কুসুমের মতো লাগে আমার কাছে। হয়তো ডিম খেতে ভাল লাগে বলেই এমনটা মনে হয়।“
কবিতার ভাষায়,

'অস্তমিত সূর্য্য তুমি নিচ্ছ কেন ডিমের মতো সাজ...
তোমায় দেখে ক্ষিদের রাজ্যে খুব একলা আমি আজ...'

আর তাছাড়া দেশ ও জগত বিখ্যাত কবিতা তো রয়েছেই,

ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়,
পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।

এই চাঁদকে নিয়ে কতো কবি কতো কবিতা লেখে। মাঝে মাঝে আমারও লিখতে ইচ্ছে করে। কিন্তু কেন জানি এই চাঁদটাকে একটা মস্ত বড় গোল বাংলা সাবান ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না আমার কাছে।
আর তা ছাড়া কবিতা লিখার আরও কিছু অখাদ্য টাইপ টপিক আছে, যেমন বৃষ্টি, বর্ষা, সন্ধ্যা, আরও অনেক কিছু।

দুখু মিয়া লিখছিল,
আজি ঝর ঝড়ো মুখর বাদল দিনে
জানি নেই
কিছুতে কেন যে মন লাগেনা,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

দুখু মিয়ার দুঃখ সবাই বুঝলেও, আমারটা কেউ বুঝেনা।কি নেই, কেন নেই, কিছুই বুঝা যায় না, কিছুতে নাকি মন লাগেনা, তো কি করার আছে???
সন্ধ্যা নিয়াও ঝামেলার অন্ত নাই,
গ্রহন লাগা সন্ধ্যায়,
এ মন কি যে চায়, কারে চায়

সন্ধ্যায় গ্রহন লাগলেই কি আর না লাগলেই কি, আন্ধার তো থাকবেই, আর সন্ধ্যাটা কাজের সময়, তখন এই আজাইরা চিন্তা করে লাভ কি?? কে কি চাইল, কারে চাইল, কেমন একটা confused situation। এখানে কবি অনেক কিছু বুঝাতে চাইছেন, আর আমি অবুঝ কিছুই বুঝতে পারছিনা, এই বুঝাতে চাওয়া আর বুঝতে না পারার মাঝখানে এক অবুঝ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। আর এই অবুঝ পরিবেশের ঘূর্ণি থেকে বেড়িয়ে বুঝলাম “ইহা আমার কম্ম নহে। “
তারপরেও, শুধুমাত্র রোম্যান্টিক মানুষ হবার জন্যে সারারাতের আধঘুম, আধো জাগরণের মাধ্যমে একটি কবিতার রচনা হল, কবিতাটি পড়ে নুবেল কমিটি আমাকে নুবেল দিতেই পারে।
তবে কোনভাবেই তা যেন শান্তিতে দেয়া না হয়, কবিতা ক্যাটাগরিতে আমাকে নুবেল দেয়া হউক, ক্যাটাগরি না থাকলে বানান হউক। কারন শান্তিতে নুবেল নিয়ে দেশের শান্তি কন্যার বা আমার কাররই শান্তিতে ব্যাঘাত ঘটাতে চাইনা। আর তাছাড়া আমি Sandwich খেলেও শ্যাম্পেন খাইনা।
আধো রাত্রি জাগরণের ফসল স্বরূপ তাহার জন্যে রচিত কবিতাটি

"একা আছি তবুও্‌,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,"

একা
করেছিলে আমায়, সুখের খোঁজে ছেড়েছিলে আমায়
আজ, পকেটে আমার রাজ্যের সব সুখ কেনার টাকা

আছি
এখনও বেচে
না অবহেলায় না অনাদরে, সিগারেটের আগুনের আঁচে
মৃত্যুর কাছাকাছি

তবুও
তোমার পোড়া স্মৃতিগুলো
ধুলো পরা চিঠিগুলো
চোখের তারায় বৃষ্টি ঝরায় এখনো

একা আছি, তবুও বলি
তোমার জন্যে এখন আর প্রেম জাগেনা মনে
তোমার অসহায় চাহনিদের তাই এড়িয়ে চলি,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

পুনশ্চঃ অনেক চেষ্টা করেও চাঁদ জোছনাদের কবিতার আসরে আনতে পারিনি, না পেরেছি রোম্যান্টিক হতে। সুখ স্মৃতিচারন করি, যেখানে একদিন সবকিছু ছিল, স্মৃতি হাতড়ে সেখান থেকে চাঁদ বা তার জোছনা, কাউকেই আনতে পারিনি, সেখানে তোমাকে ছাড়া আর কাউকে পাইনি। আর এখানে তোমাকে ছাড়া সবই আছে, তাইত পাওয়া হলনা তোমায়, আর সে জন্যেই হয়তবা ভালো আছি, বেশ ভালো।
আয় হায়, কবি হয়ে গেলাম দেখি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন